বাংলা ট্রিবিউন সুপ্রিম কোর্ট বার ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্নার নির্দেশনা চেয়ে আবেদন https://www.banglatribune.com/683490
বাংলা ট্রিবিউন রিপাের্ট, ০২ জুন ২০২১: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্না করায় একটি আইনজীবী সংগঠনের প্রতিবাদের পর এবার গরুর গােশত নির্দেশনা চেয়ে পাল্টা আবেদন জানিয়েছেন এক আইনজীবী। বুধবার (২ জুন) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক বরাবর আবেদন করেন আইনজীবী মাে. মাহমুদুল হাসান। আবেদনে তিনি বলেন, গরুর গােশত বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় বৈধ একটি খাবার। বাংলাদেশের কোনও আইনে এই গরুর গােশতকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। স্বাস্থ্যগত দিক দিয়ে এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর। যুক্তরাজ্যের অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড হর্টিকালচার ডেভেলপমেন্ট বাের্ডের তথ্য অনুযায়ী গরুর গােশতে প্রচুর পরিমাণে প্রােটিন, ভিটামিন বি-৬, বি-১২, মিনারেল, জিংক রয়েছে এবং এটি প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ শরীরের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। গরুর গােশতের পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে এবং দেশের জনগণের প্রােটিন নিশ্চিতে সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ৪.২২ কোটি টাকা ব্যয়ে “আধুনিক পদ্ধতিতে গরু হৃষ্টপুষ্ট করণ” প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সুপ্রিম কোর্ট বার ক্যান্টিনে গরুর মাংস নিয়ে বিতণ্ডা আবেদনে আরও বলা হয়, গরুর গােশত অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় ইউরােপ-আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী তা অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। এছাড়া আমাদের পাশের দেশ ভারতের সব রাজ্যে গরু জবাই ও গােশত খাওয়া নিষিদ্ধ নয়। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, গােয়া, কেরালা, তামিলনাড়, মিজোরাম, মেঘালয়, মনিপুর, হিসেবে নারীশিক্ষার উন্নয়ন নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গে গরু জবাই করা নিষিদ্ধ নয়। এছাড়া ২০১৭ সালে ভারত সরকার প্রাণীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরােধ আইনে (প্রিভেনশন অব কালচারাল টু অ্যানিমেলস অ্যাক্ট) গবাদি পশু জবাইয়ের উদ্দেশ্যে ক্রয়। বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরােপ করলেও ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট তা বাতিল বাংলা টিউন করে দেয়।
আবেদনে আইনজীবী আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে, কোনও খাবার খাওয়া বা।-খাওয়া মানুষের ব্যক্তিগত ইচছা ও রুচির বিষয়। স্বাস্থ্যগত কারণে বাবিশ্বাসজনিত কারণে কেউ গরুর গােশত অপছন্দ বানাও খেতে পারেন। তাই কোচবার বলে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসােসিয়েশনের অধীনে ক্যান্টিনগুলােতে গরুর| গােশত রান্না বা বিক্রি হবে না, এ বিষয়গুলাে অত্যন্ত অমানবিক। সুপ্রিম” কোর্টের আইনজীবীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক পরিশ্রম করেন। গোশত রান্নার তাই আইনজীবীদের প্রয়ােজনীয় পুষ্টি নিশ্চিতে বার অ্যাসােসিয়েশনের অধীনে সব ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্না ও বিক্রি হওয়া আবশ্যক। নির্দেশনা চেয়ে পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত কারণে বা বিশ্বাস জনিত কারণে যারা গরুর গােশত আবেদন।খেতে চান না, তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা উচিত। উল্লিখিত বিষয়গুলাে বিবেচনায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসােসিয়েশনের অধীনে সব ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্না ও বিক্রির নির্দেশনা দিয়ে আইনজীবীদের প্রয়ােজনীয় পুষ্টি ও সুস্বাস্থ্যের উদ্যোগনিতে আবেদনে অনুরােধ জানানাে হয়।।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্নার ঘটনায়। আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সুপ্রিম কোর্টশাখার নেতৃবৃন্দরা প্রতিবাদ জানান। একইসঙ্গে ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্না বন্ধ করতে প্রয়ােজনীয়। পদক্ষেপ নিতে সমিতির বর্তমান কমিটির প্রতি আহবান জানান তারা। আইনজীবী ঐক্য পরিষদের। সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি বিভাস চন্দ্র বিশ্বাসসহ চার আইনজীবী ওই আবেদন করেন। আবেদনটিতে স্বাক্ষরকারী
অন্য আইনজীবীরা হলেন, আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সম্পাদক অনুপ কুমার সাহা, আইনজীবী সমিতির বিজয়া পুনর্মিলনী ও বাণী অর্চনা পরিষদের আহবায়ক জয়া। ভট্টাচার্য্য এবং সদস্য সচিব। মিনটু চন্দ্র দাস। আবেদনে বলা হয়, আমরা নির্ভরযােগ্য সূত্রে জানতে পারলাম যে, গত ২৯ ও ৩০ মে রাতে সুপ্রিম কোর্ট বার। ক্যান্টিনে গাে মাংস রান্না করা হয়, রাতে তা খাবারের জন্য পরিবেশন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ঐতিহ্যগতভাবেই এর সৃষ্টিলগ্ন হতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকায় কখনােই গাে মাংস রান্না ও পরিবেশন করা হয় নাই। তাই সুপ্রিম কোর্ট ক্যান্টিনে গরুর গােশত রান্না বন্ধ রাখতে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চান তারা।