সাংসদের উপস্থিতিতে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার স্বজনদের জমি দখলের অভিযােগ
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২২,
শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার পরিবারিক সম্পত্তি দখল টিনের বেড়া দেওয়ার পর ভেতরের পুরনাে একতলা ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে।সােমবার দুপুরে তােলা ছবিপ্রথম আলাে তিনি নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা সদরে শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার স্বজনদের জমি দখলের অভিযােগ পাওয়া গেছে। বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ শাহে আলমের উপস্থিতিতে বানারীপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ওই জমি দখল করা হয় বলে ভক্তভােগীদের অভিযােগ। সাংসদ ওই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিসভাপতি। ওই বালিকা বিদ্যালয়টি শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার চাচাতাে ভাই প্রফুল্ল কুমার গুহের দুই ছেলেঅনুপকুমার গুহ ও পল্লব কুমার গুহের নামে রেকর্ড থাকা পাঁচ শতাংশ জমি গতকাল রােববার বিকেলে বিদ্যালয়ের নামে দখলে নেন সাংসদ। এ সময় জমি দখলে নিতে বাধা দেন অনুপ কুমার গুহ|কিন্তু সাংসদ শাহে আলম তাঁকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেন বলে অভিযােগ করেছেন তিনি।
অনুপ আজ সােমবার বিকেলে প্রথম আলােকে বলেন, ‘বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে পৈতৃক সূত্রে আমাদের দুই ভাইয়ের ১৩ শতাংশ জমি আছে। এর মধ্যে পাঁচশতাংশজমি মুক্তিযােদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন করার জন্য স্থানীয় মুক্তিযােদ্ধারা চাইলে আমরা রাজি হই। এ কাজে ২০২১ সালে সরকার ওই আট শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে।বাকি পাঁচ শতাংশ জমিতে আমাদের একটি পুরােনাে ভবন ছিল। ওইভবনটিতে রেডসান নামে শিশুদের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে আটকানাে ছিল সামনে আমাদের দুই ভাইয়ের মালিকানা-সংক্রান্ত সাইনবাের্ড ছিল। বালিকা বিদ্যালয়ের পাশেইজ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা ও তার চাচাতাে ভাই প্রফুল্ল কুমার গুহের দুই ছেলে অনুপ কুমার গুহ ও পল্লব কুমার গুহের নামে রেকর্ড থাকা বিদ্যালয়ের নামে দখলে নেন সাংসদ।
অনুপ কুমার গুহ অভিযােগ করেন,গতকাল বিকেলে ‘সাড়ে চারটার দিকে সাংসদ শাহে আলম লােকজন নিয়ে আমাদের জমির টিনের বেড়া ভেঙেফেলেন এবং দুই পাশে বালিকা বিদ্যালয়ের দেয়াল ভেঙে বিদ্যালয়ের করেমধ্যে জমি নিয়ে টিনের বেড়া দিয়ে আটকে দখলে নিয়ে নেন। বলেন, জমি দখলের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাংসদকে জমি দখল করতে ষেধ করি। সাংসদ। এ সময় আমাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে বলেন তােদের এখানে কোনাে জমি নেই। এরপর তিনি দাঁড়িয়ে আমাদের পাঁচ শতাংশ জমি দখলে নিয়ে টিনের বেড়া দিয়ে আটকে দেন। আজ জমিতে থাকা কিন্ডারগার্টেনের ভবনটি ভাঙার কাজ চলছে।
‘ অনপ কমার গুহ বলেন, তাঁর বাবা।জীবিত অবস্থায় বানারীপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ ছিল ওই ভবনে।এরপর বানারীপাড়া পৌরসভায়।উন্নীত হওয়ার পর স্থানীয় সরকার। মন্ত্রণালয় ওই জমি তাদের এই মর্মে একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট ওই আবেদনের পর ওই জমির ওপরে স্থগিতাদেশ জারি করেন|অনুপ কাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযােগ দেবেন বলে জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার পরিবারিক সম্পত্তি দখল টিনের বেড়া পর ভেতরের পুরনাে একতলা ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে।সােমবার দুপুরে তােলা ছবিপ্রথম আলাে অভিযােগের বিষয়ে সাংসদ শাহে আলম আজ রাতে প্রথম আলােকে বলেন, আমি জমি দখল করার লােক নই। মূলত ওই জমিটুকু ১৯৭৭ সালে অনুপের বাবা ভুয়া ডিক্রি করে ওই জমিটুকু বিদ্যালয়ের মূল ফটকের কাছে। গুহ।’ তাই শিক্ষক, অভিভাবক সবাই চায় জমিটা বিদ্যালয়ের থাকুক। এর সঙ্গে বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা জড়িত। জমির প্রকৃত মালিক তাঁরা হলে অবশ্যই জমির বাজারমূল্য অনুযায়ী বিদ্যালয় থেকে মূল্য দেওয়া হবে।’ সাংসদ দাবি করেন, অনুপশহীদ বুদ্ধিজীবী জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার আত্মীয় পরিচয় দিলেও তিনি ওই পরিবারের আত্মীয় নন। আর আমি ওই পথ দিয়ে আসার সময় পাঁচ-সাত মিনিট ঘটনাস্থলে ছিলাম। তাঁকে শাসানাের অভিযােগ অসত্য। এ বিষয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার কন্যা। মেঘনা গুহঠাকুরতা সাংসদ শাহে আলমের বিরুদ্ধে জমি দখলের । অভিযােগ তুলে আজ সকালে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, গতকাল বিকেল ৪.৩০ দিকে আমার থেকে আমার আজমিষজার বাজারমূল বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাে. শাহে আলম বােনারীপাড়া- তিনি আনে বানরীপড বালিকাবিলালয়ের মানেজিং উজিরপুর) দাঁড়িয়ে থেকে আমার পাঁচ শতাংশ জমি, যাহার সকালে জমি আরাে বানরীপাড়া মুক্তিযােদ্ধা কময়ে এর বাজারমূল্য কোটি টাকা, তা বালিকা বিদ্যালয়ের নামে দখল করে। নিয়েছে। তিনি বর্তমানে বানারীপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং মেঘনা গুহঠাকুরতার ফেসবুক কমিটির সভাপতি। এই জমির অংশ থেকে দশমিকআটশতাংশজমি আমরা বানারীপাড়া মুক্তিযােদ্ধা কমপ্লেক্সের জন্য সরকারকে দিয়েছি এবং ডিসি, বরিশাল সরকারের পক্ষে এই আট শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করে। তার পূর্ব পাশে এই জমির অংশ পাঁচ শতাংশ জমি ছিল, যা তিন দিকে পাকা ওয়াল ছিল, ৩০-১৬ ফুট ছাদসহ পাকা স্থাপনা ছিল এবং একদিকে ছিল, যা গতকাল ও আজকে ভেঙে দিয়ে দখলে নিচেছ। আমি বাধা দিলে সে গাইনি নেপাট, বংশল। কয়েকবার বলেছেন, এখান থেকে চলে যেতে, না হলে আমাকে মারবে। আমি এই দখল ও স্থাপনা ভাঙার ছবি তুললে তার লােকজন দিয়ে আমার মােবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ছবিগুলাে ডিলিট করে দেয়। দখলকত জমির গুয়ার পরিচয় ৪২ নং বানারীপাড়া মােজায়। ২৫৯ নং খতিয়ানের ৫২৫ নং দাগের অংশ। জমির পরিমাণ ৫ পোঁচ)। শতাংশ। জমির রেকর্ডীয় মালিক ১, অনুপ কুমার গুহ, ২, পল্লব কুমার গুহ|
Meghna Guhathakurta ফেসবুক স্ট্যাটাস