Beutol, ভাইরাল নিউজ বাংলা

মধ্যযুগ সপ্তমিথ।

একটু ভাবের রাজ্যে বিচরণ করছিলাম। মনে হল লক্ষ্মণসেনকে দেখতে পাচ্ছি, তাঁর সামনে দুপুরের ভাতের থালা। শুধু ফারাক এই যে দেখলাম আগুনের তরকারি, অঙ্গারের ভাত, স্ফুলিঙ্গের সালাদ। সে থালাটাও সাধারণ ধাতুর নয়, জ্বলন্ত লাভা দিয়ে তৈরি। প্রিয় লক্ষ্মণ, প্রিয় লক্ষ্মণ, তুমি আগুনের ফল খাচ্ছ?

না না, এই লেখাটা সেরকম কিছু নয়। আমাদের ইতিহাস এখনও আমাদের এক বিপুলসংখ্যক জনতার জানা নেই, তাই আমি ক্রিয়েটিভ লেখা লিখতে পারি না। আমি ইতিহাস লিখি। দেখুন লক্ষ্মণ সম্পর্কে আপনি কি জানেন? ভীরু, পালিয়ে গেছিলেন মাত্র অষ্টাদশ অশ্বারোহীর ভয়ে, তাই না? ওটা সত্যি নয়।

আসুন, মধ্যযুগের সাতখানা মিথ ভাঙি আজ।

 

১. মিথ: লক্ষ্মণ অতি কাপুরুষ অপদার্থ রাজা, তিনি বখতিয়ারের ভয়ে সিংহাসন ত্যাগ করে পালিয়ে যান।

সত্য: লক্ষ্মণ পণ্ডিত, সুলেখক, সুপুরুষ, বিখ্যাত যোদ্ধা। সেযুগে সমগ্র ভারতে তাঁর মত আর কোনও রাজা এত সম্মানিত নন, এটা লিখে গেছেন মিনহাজ। অল্প বয়সে কলিঙ্গ বিজয় করেন, বৃদ্ধ বয়সে তাঁর অধীনে সেন সাম্রাজ্যের সবথেকে সুবিশাল আয়তন। প্রয়াগ অবধি তাঁর নৌসেনা গঙ্গা শাসন করত। উগ্রমাধবের প্রতিকৃতি নিয়ে তাঁর সেনা যুদ্ধ করত।

নদিয়া সেন রাজধানী ছিল না। বৃদ্ধ বয়সে গঙ্গাতীরে বাস করবেন বলে লক্ষ্মণ নদিয়ায় এসেছিলেন। বখতিয়ার রাজমহলের পথ দিয়ে গৌড়ে প্রবেশ করতে পারেনি সেনসৈন্যের পাহারা ছিল বলে। ঝাড়খণ্ড জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বীরভূম ঢুকে সেখান থেকে বর্ধমান হয়ে নদিয়ায় আসে, এই নদিয়া সম্ভবত গঙ্গার পশ্চিম দিকে। অশ্ব বিক্রেতার ছদ্মবেশে নদিয়ায় অতর্কিতে হামলা চালিয়ে অশীতিপর বৃদ্ধ লক্ষ্মণ (এই সময় লক্ষ্মণসেনের বয়স আশির বেশি)কে বন্দী করে সেনরাষ্ট্রকে দুর্বল করা ছিল লক্ষ্য। সেনরাষ্ট্রের ভেতরে অন্তর্ঘাত হয়েছিল, কিছু ব্রাহ্মণ বখতিয়ারের দ্বারা উৎকোচ লাভ করেছিলেন।

লক্ষ্মণ নদিয়ায় এই অতর্কিত হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। বখতিয়ার আঠেরো জনকে নিয়ে লক্ষ্মণসেনের আবাস আক্রমণ করা মাত্রই তার অন্যান্য সঙ্গীসাথীরা নদিয়া নগরের দ্বারে হামলা ও লুটপাট শুরু করেন, মিনহাজ লিখে গেছেন কাজেই সংখ্যাটা অনেক বেশি ছিল। ঘোড়া বিক্রেতার ছদ্মবেশে এই আঠেরো জনকে নিয়ে বখতিয়ার ভেতরে ঢুকে আসেন, বাইরে আরও অনেকে ছিল।

লক্ষ্মণ এই অবস্থায় প্রতিরোধ অসম্ভব জ্ঞান করে পূর্ববঙ্গের যশোরের শাখানুটি চলে যান। বখতিয়ার নদিয়া রেইড শেষ করে ফিরে যায়।

বখতিয়ার বঙ্গ বিজয় করেনি। জীবদ্দশায় বখতিয়ার বাংলার আড়াই জেলার বেশি দখল করতে পারেনি। নদিয়া সে জয় করেনি, কোনকোয়েস্ট হয়নি, রেইড হয়েছিল।

বৃদ্ধ লক্ষ্মণ এরপর ফিরে এসে একটি সম্মুখযুদ্ধে বখতিয়ারকে পর্যদুস্ত করেন, নীহাররঞ্জন রায় দ্রষ্টব্য: এই মর্মে একটি শ্লোক পাওয়া যাচ্ছে যেখানে মারাঙ্কমল্লদেব অর্থাৎ লক্ষ্মণসেন ম্লেচ্ছনরেন্দ্রকে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং বিধ্বস্ত হয়ে, সম্ভবত অস্ত্র হারিয়ে বখতিয়ার তখন হাতিয়ার হাতিয়ার (শস্ত্র শস্ত্র) বলে চিৎকার করছিল।

লক্ষ্মণ তাঁর জীবদ্দশায় অপরাজিত ছিলেন। ডাকাতের অতর্কিতে হামলার মুখে অরক্ষিত গৃহ ত্যাগ করা বুদ্ধিমান ব্যক্তিমাত্রেই কর্তব্য, আমাদের স্মরণে থাকবে আধুনিক যুগে বিদ্যাসাগরও একবার একই কাজ করেছেন।

 

২. মিথ: বখতিয়ার বঙ্গ বিজয় করে মাত্র আঠেরো অশ্বারোহী নিয়ে, সেনবংশকে উৎখাত করে।

সত্য: বখতিয়ার আঠেরো অশ্বারোহী নিয়ে ঘোড়া বিক্রি করার অছিলায় নদিয়া প্রবেশ করে এবং সেনরাষ্ট্রের ভেতরে অন্তর্ঘাতের সুযোগ নিয়ে লক্ষ্মণসেনের গঙ্গাতীরের আবাসে হামলা চালায়। কিন্তু তার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের জঙ্গলের মধ্য দিয়ে একটি সেনাবাহিনী এসেছিল, তারা এই সময় নদিয়ার নগরদ্বারে আক্রমণ শুরু করে, মিনহাজ লিখে গেছেন। বখতিয়ার নদিয়া জয় করেনি, আচমকা হামলা করেই বিহারে ফের পালিয়ে যায়। বখতিয়ার জীবদ্দশায় একবার গৌড় দখল করে মুদ্রা চালু করেছিল কিন্তু গৌড় বেশিদিন তাদের অধিকারে থাকে নি, তার প্রচুর প্রমাণ আছে। বারবার সেন ও দেববংশের রাজারা গৌড় পুনর্দখল করতে থাকেন পরবর্তী দুশো বছর ধরে। বস্তুত বখতিয়ার গৌড় দখল করার পরেই গৌড় পুনরায় বেহাত হয়, এবং বখতিয়ার আবার বিহারে ফিরে যায়। নিজের জীবদ্দশায় বর্তমান মালদা, দিনাজপুর ও সংলগ্ন কিছু অঞ্চল কেবল বখতিয়ারের সাময়িক দখলে আসে।

সেনযুগের গৌড়বঙ্গ এক বিপুল সাম্রাজ্য। সেন উপাধিধারী সম্রাটরা বখতিয়ার আগমনের পর প্রায় আড়াইশ বছর ধরে শাসন করেছিল পূর্বে যদি পোড়ারাজা দ্বিতীয় বল্লালের কথা ধরি, যাঁর সঙ্গে বাবা আদমের যুদ্ধ হয়েছিল বিক্রমপুরে, বাবা আদমের সমাধি ও মসজিদ বিদ্যমান। যদি গৌড়েশ্বর মধুসেনের কথা বলি, তিনি বখতিয়ার আগমনের নব্বই বছর পরেও শাসন করেছেন।

 

৩. মিথ: বাংলা ভাষার উত্থানের জন্য মুসলমান শাসন বিশেষ ফলপ্রসূ হয়। মুসলমান সুলতান ও নবাবরা বাংলা ভাষার প্রসারে উৎসাহ দিয়েছেন।

সত্য: মধ্যযুগে বখতিয়ার থেকে সিরাজ অবধি একজন মুসলমান শাসকও বাংলা ভাষার প্রসারে কোনও কাজ করেছেন প্রমাণ নেই। বরং একজন বাঙালি সাহিত্যিককে হত্যা করেছেন প্রমাণ আছে (চণ্ডীদাস)। হুসেন শাহকে নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয় বটে, কিন্তু সে সম্পর্কে সুখময় মুখোপাধ্যায় দ্রষ্টব্য। আমি নিজেও এই পেজে এর আগে হুসেন শাহকে নিয়ে প্ৰচলিত মিথগুলোকে ভাঙতে লেখালেখি করেছি।

বাংলা ভাষাটা এই সময় একান্তই বাঙালির নিজস্ব উদ্যোগে প্রসারিত। গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গৌড়ের একজন পাঠান সুলতান বা মোগল সুবেদার/নবাব পুরো মধ্যযুগ জুড়ে বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি প্রসারে একটি কুটোও নেড়েছেন এমন প্রমাণ নেই। তারা ইসলাম ধর্ম ও আরবি ফারসি ভাষা প্রসারের কাজ করেছেন।

 

৪. মিথ: মধ্যযুগে হিন্দু ধর্মের বর্ণবাদ থেকে বাঁচতে দলে দলে অত্যাচারিত হিন্দুরা ও বৌদ্ধরা ইসলাম ধর্মের আশ্রয়ে আসে।

সত্য: এটা ইসলাম প্রসারের একটি অন্যতম তত্ত্ব। সামাজিক সাম্য ও মুক্তির তত্ত্ব। পুরো মধ্যযুগ জুড়েই ধর্মান্তর হয়েছে অনেকটাই তরবারির জোরে। তবে রিচার্ড ইটন এই সামাজিক মুক্তি বা তরবারির জোর – কোনওটাই মানেন না, তিনি কৃষির মাধ্যমে ইসলাম প্রসারিত হয় এরকম তত্ত্ব দিয়েছেন। মরুদেশ থেকে, আরব ইরান আফগানিস্তান তুর্কিস্তান মধ্য এশিয়া থেকে পীর ফাজিল বুজরুক এসে বাঙালিকে ধান চাষ করতে শিখিয়েছে, এরকম তত্ত্ব খুব সহজে দিতে পেরেছেন ইটন কারণ তিনি বাঙালির আদিযুগের ইতিহাস চর্চা করেন নি। আমাদের ভূখণ্ডের পূর্ব অংশে কৃষিকাজ অত্যন্ত প্রাচীন, এবং গুপ্তযুগ থেকেই নথিবদ্ধ।

ভারতের উত্তরে ও দক্ষিণে বর্ণবাদ অতি প্রবল। বাংলা তন্ত্রধর্মীয়, এখানে বৈদিক বর্ণবাদ তুলনায় কম প্রোথিত। সামাজিক মুক্তির তত্ত্ব সঠিক হলে বাংলায় বেশি মুসলিম আর উত্তরপ্রদেশ রাজস্থানে কম এরকম কেন?

বাংলায় ইসলামের ম্যাপ দেখলে বোঝা যায়, সেনযুগে নগর সভ্যতা যেখানেই ছিল সেখানেই ইসলাম। মালদার গৌড় থেকে হুগলির ফুরফুরা। চন্দ্রকেতুগড় থেকে উত্তরে বাণগড়। অতএব তরবারি তত্ত্ব একেবারে বাতিল করা যায় না, মধ্যযুগের সিংহভাগ ধর্মান্তর যুদ্ধের মাধ্যমে ঘটে, সেটা মুসলমানদের নিজেদের লেখা নথি থেকেই বোঝা যায়।

এরপর, আধুনিক যুগে ওয়াহাবি ফরাজীর ভূমিকা আজও যথাযথ আলোচিত নয়। মনে রাখতে হবে ইংরেজ আমলের প্রথম সেনসাসেও বাংলা হিন্দু সংখ্যাধিক্য প্রদেশ ছিল। আমাদের মধ্যে মধ্যযুগে যতটা দেশজ প্রতিরোধ ঘটেছে ইসলামের প্রসারের বিরুদ্ধে, আধুনিক যুগে পশ্চিমী শিক্ষায় শিক্ষিত বিশ্বমানব বাঙালি একদমই সে প্রতিরোধ করতে পারে নি। পূর্ব বঙ্গে ওয়াহাবি ফরাজীকে আটকাতে আদৌ কোনও উদ্যোগ ঘটে নি, কলকাতার বাঙালি খেয়ালই করে নি বাংলার মাটিতে কি ঘটছে।

 

৫. মিথ: মধ্যযুগে হিন্দু মুসলমান মিশ্রিত এক সম্প্রীতির আবহে মিশ্র বাঙালি জাতি গড়ে ওঠে। ধর্ম নয়, মানবতায় দীক্ষিত এই বাঙালি জাতি সত্যপীরের দর্শনে বিশ্বাসী, এখানে যিনি আল্লা তিনিই ভগবান।

সত্য: মধ্যযুগ জুড়ে অনবরত সংঘর্ষ ঘটেছে, সে অত্যাচারের ইতিহাস মহাভারতের মত সুদীর্ঘ । চুনাখালির জমিদার বৃন্দাবনের ঘটনা মুর্শিদকুলির শাসনের আমলে একটি ক্ষুদ্র নমুনা যে ইসলাম প্রচারকরা কিরকম আচরণ করতেন। চন্দ্রকেতুগড় রাজ্যে হামলা করা পীর গোরাচাঁদ হোক বা মুকুট রায়ের রাজ্যে হামলা করা কালু গাজি, শ্রীহট্ট রাজ্যে হামলা করা শাহ জালাল হোক বা মহাস্থানগড়ের হামলাবাজ পীর মহি সওয়ার, একটার পর একটা কাহিনী এই সাক্ষ্যই দিচ্ছে। ফুরফুরা শরীফ আর একটি উদাহরণ। তালিকা এখানে আর আমি দীর্ঘায়িত করব না।

সত্যপীর প্রসঙ্গ। কথিত আছে তার মুসলমান বেগমদের খুশি করতে বারেন্দ্র ব্রাহ্মণ গণেশ ভাদুড়ি এই পুজো শুরু করেন। বাঙালির মধ্যে বিশ্বমানবতা কিভাবে এসেছিল সে আলোচনা অনেকবার করেছি। বিশ্বমানবতা হল বিজাতীয় শক্তিকেন্দ্রর দালালি। দালালিকে সম্প্রীতি বলে বাজারে চালানো হলে সেটার মুখোশ খুলে দিতে হবে। বাঙালি নিজের ধর্ম ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে প্রতি নিয়ত যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। আর মুসলমান শাসকের হিন্দু কর্মচারী ছিল, কিন্তু কম্প্রাদর যদি প্রভুর মন যুগিয়ে চলতে চায় সেটা সম্প্রীতির উদাহরণ নয়, সুবিধাবাদের উদাহরণ।

বাঙালিত্বের শেকড় হল তন্ত্রধর্মীয় প্রকৃতিকেন্দ্রিক সংস্কৃতি। এটাকে ইসলামের সঙ্গে মেলানো যায় না। পরম ব্রহ্মকে মেশানো যায় বটে, সেজন্য আল্লা উপনিষদ লেখা হয়েছে মধ্যযুগে। ব্রাহ্ম ধর্মের প্রবক্তা রামমোহন ইসলামকে পছন্দ করতেন, একেশ্বরবাদী ছিলেন তিনি। এটা অনেকেই জানেন।যেটা অনেকেই জানেন না, রামমোহন চৈতন্য বিদ্বেষী ছিলেন।

 

৬. মিথ: গৌড়ীয় বৈষ্ণব আন্দোলন একটি সুফি প্রভাবিত আন্দোলন।

সত্য: সুফিরা তরবারিধারী যোদ্ধা ছিলেন, এটা ইতিহাসের সাক্ষ্য। ইটন নিজেও স্বীকার করেন। গৌড়ীয় বৈষ্ণব অবশ্যই তন্ত্রের গণধর্মীয় রূপ এবং শ্রীরাধা হলেন শক্তি, এই গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্ম শ্রীরাধাকেন্দ্রিক। চৈতন্য নিত্যানন্দ বাঙালি জাতির শেকড় থেকে এই আন্দোলনের সমস্ত উপাদান নিয়েছেন, প্রমাণ করা যায়। এটাও প্রমাণ করা যায় যে বাংলায় স্বাধীন বারো ভুঁইয়ার রাজনৈতিক উত্থানের পেছনে চৈতন্য আন্দোলনের সুনির্দিষ্ট অবদান ছিল।

 

৭. মিথ: মধ্যযুগে প্রথম কালীমূর্তি সৃষ্টি করেন আগমবাগীশ। কালীপুজো মধ্যযুগে প্রথম শুরু। এই মধ্যযুগেই দুর্গাপুজো শুরু করেন কংসনারায়ণ। আজকের বাঙালির সবথেকে বেশি জনপ্রিয় দুই মাতৃকা দুজনেই মধ্যযুগে সৃষ্ট।

সত্য: বহুবার লিখেছি। কালী ও দুর্গা দুজনের উপাসনা উপমহাদেশে বহু প্রাচীন, হরপ্পা সভ্যতায় ঊষা নিশার উপাসনা থেকে এসেছে। বর্তমান কালী মূর্তি পালযুগে প্রথম তৈরি হয়। আগমবাগীশের তিনশ বছর আগেও হুবহু বর্তমান কালী মূর্তির বিবরণ পাওয়া যায় বৃহদ্ধর্মপুরাণে। আর মা দুর্গা বর্তমান মূর্তিও পালযুগে সৃষ্ট। আমাদের সব ইতিহাস মুছে, সব প্রত্ন দ্রব্য বিশ্বমানবরা বিদেশে পাচার করে দিয়ে আমাদের শেকড়বিচ্ছিন্ন করেছেন এবং আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন যে আমাদের জাতির কোনও প্রাচীন ইতিহাস নেই।

তমাল দাশগুপ্ত Tamal Dasgupta

বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে সংযোগ বন্ধ করার কথা হচ্ছে না। বাঙালি প্রাচীন কাল থেকেই সাম্রাজ্যবাদী জাতি। তাই সারা বিশ্বকে জানুন, বেদ হোক বা কোরআন হোক বা বাইবেল বা ত্রিপিটক, সবই জানুন। কিন্তু আদ্যা নিত্যা জগদকারণ প্রকৃতির যে ধর্ম, সেই তন্ত্রধর্মীয় শেকড়ে তন্নিষ্ঠ থাকুন, তবেই আপনি বাঙালি।

লক্ষ্মণসেনের আমলে সেনসাম্রাজ্যের সামরিক প্রতীক উগ্রমাধবের মূর্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। কর্ণাটদেশের সঙ্গে সেনদের সাংস্কৃতিক চলাচল নিয়ে আগে পোস্ট দিয়েছি, হোয়সালেশ্বর মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ মূর্তি, কালী মূর্তি ও দুর্গা মূর্তি নিয়ে এর আগে লিখেছি। দেখছেন ওই মন্দিরের উগ্র নরসিংহ মূর্তি। উগ্রমাধবের মূর্তিরূপ দেখতে অনেকটা এরকমই ছিল, মনে করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *