ঐতিহাসিক ৩৩৭নম্বর কালভার্টে ও সৈয়দপুরের কতিপয় বিহারি কসাইদের নৃশংসতা আজ ১৩ই জুন,গােটা সেয়দপুর অঞ্চলের জন্য একটি বেদনার দিন,১৯৭১ সালের এই দিনে সকাল ১০টায় হত্যা করা হয়েছিল ৪৪৮ জন ট্রেনযাত্রীকে যা ট্রেন গনহত্যা নামে পিরচিত।সেই ট্রেন গনহত্যা সংঘটিত হয়েছিল গােলাহাটের ৩৩৭ নম্বর কালভাটের কাছেই। ৩৩৭নম্বর কালভার্টের নাচে ছিল রক্তের বন্যা আর লাশের স্তুপ।ট্রেনের ৪টি কম্পার্টমেন্ট এর সবাইকে হত্যা করা হয়। সৈয়দপুরের গনহত্যা ছিল ভয়াবহ। বলতে গেলে এখা নে প্রতিটা পাড়ায় গনকবর আছে।ঘটনাটি ছিল এরকম!কদিন ধরে সৈয়দপুর শহরে মাইকে একটি ঘােষণা দেওয়া হচ্ছিল।পাকিস্তানি সেনাদের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছিল ওই ঘােষণা। বলা হচ্ছিল শহরে যেসব হিন্দু মাড়ােয়ারি আটকা পড়ে আছেন, তাঁদের নিরাপদে ভারতে পৌঁছে দেওয়া হবে।এ জন্য একটা বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেনটি সৈয়দপুর রেলস্টেশন থেকে ভারতের শিলিগুড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
কথা মত যাত্রী নিয়ে ট্রেন যাত্রা করে। হিন্দু মার । মাড়ােয়ারীদের আলাদা করে ৪টি কম্পার্টমেন্টে উঠানাে হয়। কিছুক্ষন পর সৈয়দপরের ট্রেনটি গােলাহাট নামক স্থানে এসে থেমে যায়। পাক সৈন্যরা ট্রেন কোচে কতিপয় বিচার ভেতরে গিয়ে হত্যা শুরু করে। কেউ কেউ জানালা দিয়ে পালিয়ে যেতে সমর্থ হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বেঁচে আছেন এখনাে। কসাইদের গােলাহাট হত্যাকান্ড নিয়ে প্রথম আলাের M R Alam Jhantu ভাইয়ের একটি রিপাের্ট থেকে কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ননা পড়ে ভয়ে শরীর কাঁপছিল। সেই নৃশংসতা দিনের সেই সব মানুষের আহাজারি, চিৎকার যেন শুনতে পাচ্ছিলাম জায়গাটি পরিদর্শন করবার সময়। ওই হত্যাযজ্ঞে শিশু, বৃদ্ধ, নারীরাও রেহায় পাননি। বিভিন্ন সূত্রে বলা হয়, ওই একটি বেদনার দিন, ট্রেন হত্যাযজ্ঞে ৪৪৮ জনকে একে একে রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ৩৩৭ নম্বর কালভার্টের আশপাশের জায়গায় ছিল রক্ত আর লাশ। পরবর্তীতে গােলাহাটের যে স্থানে বধ্যভূমি স্মৃতি স্তম্ভ করা হয়েছে সেখানে পরে ছিল সর্বাধিক স্তুপাকৃত লাশ। এবারের সৈয়দপুর পরিভ্রমণে গােলাহাট বধ্যভমি দেখবার সময় ঝনট ভাই সাথে ছিলেন। তিনি পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন ৩৩৭ নম্বর কালভার্টের সাথে। বর্ননা করেছেন সেই দিনের নানা কথা। আমার লেখার তথ্য গুলাে নিয়েছি ঝনট ভাইয়ের প্রথম আলাের রিপাের্ট, নীলফামারীর ইতিহাসের লেখক জাহাংগির আলম সরকার আর নীলফামারী জেলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের লেখক হাফিজুর রহমান হাফিজের বই থেকে। লেখিকা : এলিজা বিনতে এলাহি