ভগবান’ নিয়ে কটুক্তি, ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযােগ
শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন। ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববিদ্যালয় রিপাের্টার ২৫ জুলাই, ২০২১।
সামাজিক যােগাযােগমাধ্যম ফেসবুকে সনাতন ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযােগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযােগ দায়ের করা হয়েছে। মদ ও দুধ সম্পর্কিত বহুল প্রচলিত একটি কৌতুক ফেসবুকে শেয়ার করার পর তার বিরুদ্ধে এ অভিযােগ আনা হয়।
গতকাল শনিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযােগ দায়ের করা হয়েছে৷ তবে এটিকে সাধারণ ডায়েরি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ডিবির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে পাঠানাে হয়েছে।
অভিযােগে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) সনাতন ধর্মের ‘ভগবান’ সম্পর্কে সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যম ফেসবুকে কটুক্তিমূলক লেখা পােস্ট করেন অধ্যাপক হাফিজুর। এর মাধ্যমে হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া হয়েছে বলে লিখিত অভিযােগ বলা হয়েছে।
শেখ। হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার আর্জিটি করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু যুব পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক অমিত ভৌমিক। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, ধর্মীয় উগ্রবাদ সৃষ্টি, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার মানসে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতমূলক কুরুচিপূর্ণ পােস্ট করেছেন। তাই তিনি থানায় অভিযােগ দায়ের করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, আমার পােস্টে যদি কারাে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগে থাকে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। ফেসবুকে শেখ হাফিজুর রহমানের স্ট্যাটাসের পর এনিয়ে বিতর্ক শুরু হলে তিনি স্ট্যাটাসটি ফেসবুক থেকে মুছে দেন এবং পরে তার ব্যাখ্যা দিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ বিষয়েশাহবাগ থানার ওসি মওদুদ হাওলাদার জানান, সাইবার ক্রাইম ইউনিটের মতামত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইত্তেফাক/এসজেড
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযােগে ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে জিডি
* অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২১ । ফেসবুক স্ট্যাটাসে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিযােগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। বাংলাদেশ হিন্দু যুব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিত ভৌমিক শনিবার রাজধানীর শহবাগ থানায় এ জিডি করেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, শনিবার এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযােগ পেয়েছি। জিডি হয়েছে, তবে এখনও মামলা হয়নি৷ জিডিটা আমরা সাইবার ক্রাইমে পাঠিয়েছি। তারা যাচাই-বাছাই করে মতামত দিলে পরবর্তীকালে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।লিখিত অভিযােগে বলা হয়, অধ্যাপকহাফিজুর রহমান কার্জন কুরুচিপূর্ণ মানহানিকর সর্বোপরি সনাতন ধর্মের ভগবানকে হেয়প্রতিপন্ন করে সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এটি ইতােমধ্যে ভাইরাল হয়ে গেছে। যা সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে ব্যাপক আঘাতের সামিল। এ ঘটনায় এক বিবৃতিতে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে’ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, ভারপ্রাপ্ত সভাপতিনিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রােজারিও ও সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত রােববার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে ভগবান হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা তাই ভগবানকে নিয়ে এ ধরনের পােস্ট দেওয়ার মাধ্যমে হাফিজুর রহমান কার্জন জেনে শুনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণন করেননি বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টা চালাননি, শিক্ষক হিসেবে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধও করেছেন। এদিকে হাফিজুর রহমান কার্জনের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাে. আখতারুজ্জামানের কাছে শনিবার স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু আইনজীবী পরিষদ। এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। ফেসবুকে লেখার বিষয় তাে, প্রক্টরকে বলা হয়েছে, বিষয়টি যথাযথভাবে দেখতে।
এদিকে ওই স্ট্যাটাস মুছে দিয়ে রােববার আরেকটি স্ট্যাটাসে ক্ষমা চেয়েছেন অধ্যাপক হাফিজুর রহমার কার্জন। সেখানেতিনি লেখেন, ‘অনেকে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে আমার পােস্টটিতে আহত হয়েছেন। যারা আমার পােস্টটিতে আহত হয়েছেন ও কষ্ট পেয়েছেন, তার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। অভিযােগ ও পদত্যাগের দাবির বিষয়ে অধ্যাপক কার্জন বলেন, পদত্যাগ করার মতাে কোনাে অপরাধআমি করিনি। আমি যেটা লিখেছি, এসব বিষয় নিয়ে অনেক ম্যাটাফোরিক গল্প ও গাথা প্রচলিত আছে। এসব বিষয় ফেসবুক বা সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে অনেকেই শেয়ার করে থাকেন। তিনি বলেন, আমার এটাতে যে এ রকম প্রতিক্রিয়া হবে, সেটা আমার থারনায় ছিল না। কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং ক্ষমা চেয়ে পােস্ট দিয়েছি।